![ঢাকার কাছাকাছি জনপ্রিয় ৩৫ টি রিসোর্টের তথ্য](https://www.tripsilo.com/uploads/images/blog/556410_867332_2.jpg)
ঢাকার কাছাকাছি জনপ্রিয় ৩৫ টি রিসোর্টের তথ্য
01/04/2017
![বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর ৭ টি দেশ](https://www.tripsilo.com/uploads/images/blog/774540_manarola-italy-GettyImages-.jpg)
বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর ৭ টি দেশ
20/02/2018
![ঢাকা-কাঠমান্ডু বাস চলাচল শুরু ২৩ এপ্রিল](https://www.tripsilo.com/uploads/images/blog/863410_27752519_1775592422496155_9179720641067806910_n.jpg)
ঢাকা-কাঠমান্ডু বাস চলাচল শুরু ২৩ এপ্রিল
28/03/2018
![সেনজেন ভিসায় ঘুরতে পারবেন ২৬ টি দেশ](https://www.tripsilo.com/uploads/images/blog/449937_Shenzhen-visa-.jpg)
দুবাইতে বেড়াতে যাবার ব্যাপারে আসলে কারো আগ্রহের কমতি থাকার কথা না! এক সময়ের মরুদ্যান খ্যাত দুবাই আজ কঠোর পরিশ্রম, যথাযথ পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ গ্রহনের মাধ্যমে দারুন আকর্ষণীয় একটি দেশে পরিণত হয়েছে। মরুভুমির বুকে অসাধারণ সব আকর্ষণীয় স্থাপনা গুলো প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দুবাই সরকার সারা পৃথিবীতে সাড়া ফেলে দিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে ২০২৫ সালের মধ্যে দুবাই ভ্রমণকারী পর্যটকের সংখ্যা বছরে ৪০ মিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে।
আজকের ব্লগে আমরা কথা বলেছি দুবাই ভ্রমণ সংক্রান্ত নানা বিষয় নিয়ে। প্রধানত আমরা তুলে ধরেছি দুবাই এর সেরা সব ভ্রমণ গন্তব্যগুলোকে। পাশাপাশি আরও উঠে এসে দুবাইগামী এয়ারলাইন্স, বিমান ভাড়া, বিমান টিকিট কোথায় কিভাবে পাবেন ইত্যাদি বিভিন্ন তথ্য।
বুরজ আল-খালিফা
বুরজ আল খলিফাকে বলা হয় দুবাইয়ের ল্যান্ডমার্ক বিল্ডিং। বর্তমানে এটি দুবাই তথা সারা পৃথিবীর মধ্যে মানুষ দ্বারা নির্মিত সর্বোচ্চ স্থাপনা। ৮২৯.৮ মিটার উচ্চতা বিশিষ্ট এই মহা ভবনটি শুধু দুবাইয়ের সর্বচ্চই না, অন্যতম সুন্দর এবং শক্তিশালী গঠন বিশিষ্ট ভবন। দুবাই ভ্রমণকারীদের অন্যতম সেরা আকর্ষণ হল বুরজ আল-খলিফার ১২৪ তলায় অবস্থিত অভজারবেশন ডেক দেখতে যাওয়া। এখান থেকে সমগ্র দুবাইকে বার্ডস আই ভিউ থেকে দেখা যায়। রাতের বেলার দৃশ্য যেন আরও চমৎকার। এসময় অভজারবেশন ডেক থেকে রাতের আলোয় সুসজ্জিত দুবাই শহর দেখা যায়।
পৃথিবীর সব থেকে উচু ভবনঃ বুরজ আল-খালিফা
নিচ তলাতেও কম জৌলুস নেই। আশে পাশে রয়েছে অনেক চমৎকার কিছু বাগান এবং কৃত্রিম ঝর্ণা। এর মধ্যে রয়েছে পৃথিবীর সর্বচ্চ কৃত্রিম ঝর্ণা ‘’দুবাই ফাউন্টেইন’’ যা নির্মিত হয়েছে লাস ভেগাসের বেল্লাজিয়ো ঝর্ণার অনুকরণে।
বুরজ আল-খলিফার এইসব অভিজ্ঞতা নিতে হলে আপনাকে টিকিট কেটে ভিতরে ঢুকতে হবে। টিকিটের মুল্য বেশী না। তবে উচ্চ চাহিদার কারণে টিকিট পাওয়াটা একটা বড় সমস্যা। তাই অনলাইনে আগাম বুক করে নিতে পারেন বুরজ আল – খলিফার টিকিট তাঁদের অফিশিয়াল ওয়েব সাইট থেকেঃ https://www.burjkhalifa.ae/en/
বুরজ আল আরব
দুবাইয়ের অন্যতম জনপ্রিয় আরেকটি আকর্ষণ হল এই বুরজ আল আরব। আল জমহুরিয়া রোডের পাশে একটি কৃত্রিম দীপের উপর স্থাপিত হয়েছে এই হোটেলটি। দুবাই তথা পৃথিবীর অন্যতম বিলাসবহুল হোটেল গুলোর মধ্যে এটি একটি। ১৮০ মিটার উচ্চতা বিশিষ্ট বুরজ আল আরবে রয়েছে ২০৩ টি প্রিমিয়াম স্যুট। চমতকার এই ভবনটি দেখতে অনেকটা পাল তোলা জাহাজের মত। এটি পৃথিবীর এক্মাত্র ৭ তারকা বিশিষ্ট হোটেল।
বুরজ আল আরব
এর আর্কিটেকচার জগত বিখ্যাত এবং প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক শুধু মাত্র এই ভবন্ দেখতেই দুবাই চলে আসেন। এখনে অবস্থনাকারী সম্মানিত অতিথিদের জন্য প্রস্তুত থাকে ঝকঝকে লিমুজিন গাড়ি। রয়েছে প্রাইভেট হেলিপ্যাডও। হোটেল কক্ষের ভিতরে রয়েছে সোনার তৈরী বিভিন্ন আসবাব পত্র ও তাদের সীমাহিন জৌলুস। হোটেলে অনেক সংখ্যক পুল ছাড়াও বেশ কিছু কৃত্রিম ঝর্না যেগুলোর সৌন্দর্য আসলে বর্ণনা করে বুঝান মুশকিল!
দুবাইয়ের বিখ্যাত শপিং মল ‘’দুবাই মল’’
দুবাইয়ের সবচাইতে বৃহৎ ও বিখ্যাত শপিং মল হল ‘’দুবাই মল’’। এর অবস্থান বুরজ আল খলিফায়। এটি বুরজ আল খলিফা এবং দুবাই অ্যাকুয়ারিয়াম এর প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করে। এই বিখ্যাত শপিং সেন্টারে দেশ বিদেশের সব বড় বড় ব্র্যান্ডের শো-রুম রয়েছে।
বিখ্যাত শপিং মল ‘’দুবাই মল’’
এছাড়া রয়েছে আইস স্কেটিং জোন, গেমিং জোন, সিনেমা কমপ্লেক্স এবং বিভিন্ন ধরনের বিনোদনের ব্যাবস্থা। এখানে ইউরোপ, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়া থেকে প্রচুর লোক আসেন, এজন্য সব ধরনের সুযোগ সুবিধাই আন্তর্জাতিক মানের। এছাড়াও রয়েছে বিশ্বমানের ফুড কোর্ট। আরও আছে ফ্যাশন শো, লাইভ মিউজিক, বিভিন্ন ফেস্টিভ্যাল ও অন্যান্য বিনোদনের ব্যাবস্থা।
দুবাই যাদুঘর
দুবাই জাদুঘরটি আল ফাহিদি নামক একটি প্রাচীন একটি দুর্গে অবস্থিত। দুর্গটি ১৭৮৭ সালে দুবাই এর প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করতে এই দুর্গটি তৈরি করা হয়। পরবর্তীতে এই দুর্গ বিভিন্ন সময় দুবাইয়ের শাসকদের বাসস্থান হিসেবে এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসেবে ব্যাবহার হত। এর পর ১৯৭১ সালে এই প্রাসাদ দুর্গকে সংস্কার করা হয় এবং একে যাদুঘরে রূপান্তরিত করা হয়। এর প্রধান ফটকেই রয়েছে পুরনো দিনের দুবাই ও আধুনিক দুবাই এর একটি তুলনামূলক ম্যাপ।
দুবাই যাদুঘর
এখানে গেলে পুরোনো দিনের দুবাইকে সেই পরিবেশে আবিস্কার করতে পারবেন। দেখা যাবে প্রাচীন কালে ব্যাবহার করা নৌকা ও অন্যান্য জলজ যানবাহন। আরও দেখতে পাবেন তালপাতার তৈরি তখনকার দিনের ঘর বাড়ী। আরও আছে সেসব দিনের ব্যাবহার করা বিভিন্নও ধরনের অস্ত্র পাতি। আরও দেখা যাবে বেদুঈনদের জীবন ধারার নানা নিদর্শন।
এর পাশে আছে বাস্তাকিয়া কোয়ার্টার। উনিশ শতকের শেষ দিকে এই কোয়ারটার নির্মাণ করা হয় মুলত পারস্যের ধনাঢ্য ব্যাবসায়িদের জন্য। তাঁরা মুক্তা এবং দামি পোশাকের ব্যাবসা করার জন্য দুবাই আসত। তাঁদের জন্য সব ধরনের সুযোগ সুবিধা থাকত এই কোয়ার্টার গুলোতে। এখানকার বাড়ী ঘর গুলোর বিশেষ বৈশিষ্টের মধ্যে ছিল এগুলোর মধ্যে বেশিরভাগ ছিল লাইমস্টোনের তৈরি। বাড়ী গুলোর উপরে একটি করে উইন্ড টাওয়ার। এই উইন্ড টাওয়ারের কাজ ছিল ঘরের মধ্যে ঠাণ্ডা বাতাসের প্রবাহ নিশ্চিত করা।
পৃথিবীর উচ্চতম হোটেল Gevora Hotel
এতক্ষনে পৃথিবীর উচ্চতম ভবনের সাতে পরিচিত হয়ে গেছেন। এবার বলছি উচ্চতম হোটলের কথা। এর নাম Gevora Hotel. প্রায় ১২ বছর ধরে নির্মাণ কাজ চলার পর ১,১৬৮ ফুট (৩৫৬ মিটার) উচ্চতা বিশিষ্ট এই হোটেলের উদ্বোধন করা হয় ২০১৮ সালে। ৭৫ তলার এই ভবনে রয়েছে ৫২৮টি কক্ষ। রয়েছে বহু সংখ্যক পুল, রেস্তোরা ও লাউঞ্জ। পৃথিবীর প্রশস্ততম রাস্তা শেখ যায়েদ রোডে অবস্থিত এই হোটেলটি বুরজ খালিফা থেকে মাত্র ১ কিলমিটার দূরে অবস্থিত।
পৃথিবীর সবথেকে উচু হোটেল Gevora Hotel
Gevora Hotel সহ অন্যান্য যেকোন হোটেলে রুম বুক করতে চাইলে সরাসরি ফ্লাইট এক্সপার্টের কাস্টমার কেয়ার নম্বরে কল করুন +88-09617-111-888
অফিস ঠিকানাঃ ফ্লাইট এক্সপার্ট, ৯০/১ মতিঝিল সিটি সেন্টার, লিফট এর ২৬ তলা। ঢাকা – ১০০০
দুবাই মিরাকল গার্ডেন
দুবাইয়ের আরেকটি অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান হল দুবাই মিরাকল গার্ডেন। ২০১৩ সালের বিশ্ব ভালবাসা দিবসে উদ্বোধন করা হয় এই বাগানটি। ৭ লক্ষ্ ৮০ হাজার স্কয়ার ফিট আয়তন বিশিষ্ট এই বাগান পৃথিবীর বৃহত্তম ফুলের বাগানের মর্যাদা পেয়েছে। এখানে রয়েছে প্রায় ২৫০ মিলিয়ন গাছ এবং ৫০ মিলিয়নেরও বেশী ফুল। ২০১৫ সালে গার্ডেন ট্যুরিজম এ্যাওয়ার্ড সংস্থা এই বাগাঙ্কে অত্যন্ত সম্মানিত মোসেল এ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করে।
দুবাই মিরাকল গার্ডেন
দুবাই মেট্রো রেল
দুবাইয়ের আরেকটি চমৎকার অভিজ্ঞতা নেবার জায়গা হল এর দুর্দান্ত মেট্রো রেল সার্ভিস। এখন পর্যন্ত রেড লাইন এবং গ্রীন লাইন নামক দুইটি রেল সার্ভিস চলছে। তৃতীয় লাইনের কাজ এখন চলছে। দুটো ট্রেনই আন্ডারগ্রাউন্ড ভিত্তিতে চলাচল করে। প্রতিটি ট্রেন অত্যাধুনিক ইঞ্জিন ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি দ্বারা পরিচালিত এবং এগুলো সম্পূর্ণ অটোমেটেড হবার কারনে কোন চালকের প্রয়োজন হয় না। ২০১৬ সাল পর্যন্ত রেড লাইন ছিল পৃথিবীর দীর্ঘতম অটোমেটেড মেট্রো রেল।
দুবাই মেট্রো রেল
শেখ সাইদ আল মাখতুম হাউস
শেখ সাইদ আল মাখতুম ছিলেন দুবাই এর ইতিহাসের সবচাইতে প্রভাবশালী শাসক। তাকে আধুনিক দুবাইয়ের স্থপতি ও বলা হয়ে থাকে। দুবাইয়ের বর্তমান শাসক মোহাম্মদ বিন রাশিদ আল মাখতুম এর দাদা ছিলেন তিনি। ১৯২১ থেকে ১৯৫৮ পর্যন্ত সুদীর্ঘ-কাল দুবাইকে শাসন করেন শেখ সাইদ আল মাখতুম। তিনি তার শাসনামলের প্রথম দিকে যে ঐতিহ্যবাহী প্রাসাদে তিনি থাকতেন, ঐ প্রাসাদটি পরবর্তীতে সংস্কার করে যাদুঘরে রূপান্তরিত করা হয়।
শেখ সাইদ আল মাখতুম হাউস
বর্তমানে এই যাদুঘরে শেখ সাইদ আল মাখতুমের আমলে ব্যাবহার করা বিভিন্নও জিনিসপত্র জন সাধারণের প্রদর্শনের জন্য উম্মুক্ত রাখা হয়েছে। এখানে সেই আমলের বিবিন্ন তৈজস পত্র, আসবাব, পোশাক এবং বিভিন্ন প্রকার সমরাস্ত্রের সমারোহ রয়েছে। এই যাদুঘর ভ্রমণের মাধ্যমে পুরনো দিনের দুবাই সম্পর্কে জানতে পারবেন। এখানেই পাবেন দুবাই মিউজিয়াম অফ হিস্টোরিকাল ফটোগ্রাফ এন্ড ডকূমেন্টস। এখানে পুরনো দিনের দুবাই এর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অ দৈনন্দিন জীবনের প্রচুর ছবি এবং গুরুত্বপূর্ণ দলিলাদির কপি রয়েছে দর্শনার্থীদের জন্য।
দুবাইয়ের মত একটি জায়গা ভ্রমণ করতে পারলে তা নিঃসন্দেহে আপনার জীবনের অন্যতম স্মরণীয় একটা অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে, এ কথা বাজী রেখে বলা যায়। খরচ কমাতে চাইলে বেশ আগে থেকে ট্যুর প্ল্যান করে আগে ভাগেই বুক করে ফেলতে পারেন আপনার গন্তব্যের রিটার্ন সহ টিকিট।